প্রতি বছর ১ মে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা বাংলাদেশে 'মে দিবস' নামে পরিচিত। এই দিনটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের প্রতীক। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমিকদের আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শ্রমিকদের মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনার স্মরণে বিশ্বব্যাপী মে দিবস পালিত হয়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মে দিবস
বাংলাদেশে মে দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে শ্রমজীবী মানুষদের শুভেচ্ছা জানান এবং শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
শ্রমিকদের বর্তমান বাস্তবতা
বাংলাদেশের শ্রমিকরা এখনও ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য সংগ্রাম করছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে শ্রমিকদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে উঠেছে। শ্রমিক সংগঠনগুলো ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, আউটসোর্সিং বন্ধ, ধর্মঘটের অধিকার নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছে।
সরকারের উদ্যোগ
সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যেমন শ্রম আইন আধুনিকায়ন, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ, নারী শ্রমিকদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা ইত্যাদি। তবে, শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতে, এসব উদ্যোগের বাস্তবায়নে আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা
শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার, মালিক ও শ্রমিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের মতামতের ভিত্তিতে নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি। শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নই স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি হতে পারে।
উপসংহার:
মে দিবস শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তার প্রতীক। বাংলাদেশে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে সরকার ও সমাজের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।
0 Comments