ভূমিকা:
ভারতীয় ক্রিকেটের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রদের একজন বিরাট কোহলি অবশেষে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পর্দা টানলেন। ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক করে ১৭ বছরের দীর্ঘ যাত্রার শেষে, তিনি ২০২৫ সালের মে মাসে টেস্ট ক্রিকেট থেকেও অবসর নিয়ে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন।
এটি শুধু একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি নয়, বরং একটি ক্রিকেট যুগের শেষও বটে।
বিরাট কোহলির ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান:
ফরম্যাট | ম্যাচ | রান | শতক | গড় | সর্বোচ্চ |
---|---|---|---|---|---|
টেস্ট | 123 | 9,230 | 30 | 49.29 | 254* |
ওয়ানডে | 292 | 13,848 | 50 | 58.67 | 183 |
টি-২০ | 117 | 4,008 | 1 | 52.73 | 122* |
মোট | 532 | 27,000+ | 81 | 50+ | - |
কেন অবসর নিলেন কোহলি?
কোহলি তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন:
“শরীর এবং মনের ওপর চাপ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। আমি আমার পরিবার, স্ত্রী এবং কন্যার সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, এখন সময় হলো এক ধাপ পেছনে গিয়ে জীবনকে উপভোগ করার।”
অবসরের পেছনে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ:
বয়স (৩৬)
ধারাবাহিক ইনজুরি
পরিবারকে সময় দেওয়ার ইচ্ছা
নতুন প্রজন্মকে সুযোগ করে দেওয়া
ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত:
২০০৮ – অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক
২০১১ – বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য
২০১৪ – টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ধোনির উত্তরসূরি
২০১৮-১৯ – অস্ট্রেলিয়ায় ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়
২০২৩ – একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০টি শতক, শচীন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে রেকর্ড
অধিনায়কত্বে কোহলি:
বিরাট কোহলি ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়কদের একজন।
টেস্ট ক্যাপ্টেন হিসেবে ৪০টি জয় (রেকর্ড)
বিপক্ষের মাঠে আগ্রাসী ক্রিকেট ও ফিটনেস সংস্কৃতি গড়ে তোলা
ধোনির পরবর্তী নেতৃত্বে রূপান্তরের সেতুবন্ধ
বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া:
শচীন টেন্ডুলকার: “বিরাট এক অনুপ্রেরণা। ভবিষ্যতের প্রজন্ম তার মতো খেলোয়াড় হতে চায়।”
বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট: “বিরাট ভারতীয় ক্রিকেটকে শৃঙ্খলা, আস্থা এবং আগ্রাসনের নতুন সংজ্ঞা দিয়েছে।”
ক্রিকেটপ্রেমী জনগণ: সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে #ThankYouKohli ট্রেন্ড করছে।
ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ:
কোহলির মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের অভাব পূরণ করা কঠিন
নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা
মিডল অর্ডারে স্থায়িত্ব আনা
উপসংহার:
বিরাট কোহলির বিদায় ক্রিকেট ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত।
তিনি কেবল একজন ব্যাটসম্যান নন, তিনি একজন ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং চরিত্রের নাম।
“জয় হোক কিংবা হার, কোহলির আগ্রাসন ও নিষ্ঠা তাকে কিংবদন্তি করে তুলেছে।”
আজ কোটি কোটি ভক্ত তাঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, আর আগামী প্রজন্ম তাঁকে ইতিহাসে পড়বে—একটা ‘কোহলি যুগ’ হিসেবে।
0 Comments