পারসা ইভানার অপূর্ব উক্তি—“ভালো কিছু করতে গেলে একটু বিরতি দরকার হয়”—শব্দের সরলতার আড়ালে আত্মউদ্বোধনের একটি গভীর বার্তা বহন করে। আধুনিক জীবনের ছন্দ এসে পড়ে প্রতিনিয়ত গতি, চাপ ও কর্মব্যস্ততায়; একটানা ঝরঝরে পরিশ্রম যখন দীর্ঘায়িত সময় ধরে ভর করে, তখন শরীরিক ক্লান্তি ও মানসিক টান বেড়ে যায়, এবং কখনো কখনো সৃজনশীলতা ম্লান হয়ে যায়। এই অবস্থায়, পারসার মনে করিয়ে দেওয়া দায়িত্ব হলো: প্রতিদিনের কাজের তালে নিজেকে—শরীর, মন, ভাবনাকে—বিশ্রাম দেয়ার সুযোগ দেওয়া, যেন সেগুলো পুনরায় খোঁজে শক্তি, ধারণা ও উৎসাহের নতুন উত্স। প্রকৃতপক্ষে, উচ্চ মানের স্থায়িত্ব শুধুমাত্র ধারাবাহিক কাজেই আসে না; বরং সঠিক সময়ে বিরতি এনে সময়-সংলগ্ন রিচার্জ নিশ্চিত করাও তার অপরিহার্য অঙ্গ।
যখন মন, শরীর ও ভাবনাকে আলাদা করে এড়িয়ে চলতে না দিয়ে সামান্য সময়ের জন্য স্থির রাখা হয়, তখন দেখা যায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন। একান্ত নিজেকে কোনও বইয়ের পাতায় কিংবা ঢেউয়ের শব্দে হারিয়ে ফেললে, কয়েক মিনিটের ধ্যান বা প্রকৃতিতে হাঁটা-ঘুরাটাও হয়ে ওঠে অবচেতনস্থলে ধারণাপ্রবাহ বৃদ্ধির সেরা সুযোগ। পারসাকে জানা যায়, এই অনিদ্রিত আবেগ এবং আলঙ্ঘনীয় আবির্ভাবের পেছনে অপেক্ষমাণ সৃজনশীলতা, গভীর চিন্তাশীলতা, ও সহজাত অন্তর্দৃষ্টির বিকাশ ঘটে। তাই বিরতি কোনো অলসতা নয় বরং সময়(figurative sense)-সংকোচন করে পুনর্গঠনের সেই ক্ষতিকর শক্তিনাশক; এটি যেন নতুনভাবে আরম্ভের এক অবিস্মরণীয় প্রবাহ।
পেশাগত ক্ষেত্রে, কর্মবিরতি একটি পূর্বনির্ধারিত योजनাকৃত অধ্যায়, যা বিশ্লেষণ ও সৃজনশীল উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় “রিফ্রেশিং পিরিয়ড” হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। একটানা ক্লান্ত মন যখন নতুন চিন্তার দলিল তৈরি করে, তখন বিরতি তাকে বিশ্লেষণী ও সুচিন্তিত করতে সহায় করে,—যেমন সম্পাদক যখন একনজরে পড়ে ভুল ধরেন, বা গবেষক যখন পুনর্বিবেচনা করে তথ্য বিশ্লেষণ করে। এই বিরতি হোক সামান্য ভ্রাম্যমাণ হাঁটা অথবা দীর্ঘক্ষণ চুপচাপ বসে থাকা, কাজ এবং প্রতিফলনের মধ্যে স্বাস্থ্যকর একটা ব্যবধান তৈরি করে, যা দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য পূরণে অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা রাখে।
জীবনের ঘূর্ণায় মানসিক আর্থব্যবসায়, পরিবার, স্বাস্থ্য, সৃজনশীলতা—এগুলোকে সঠিক অনুপাতে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে মাঝে মাঝে এই বিরতি থামিয়েনায় নেই বরং শুরু করার জন্য অপরিহার্য। পারসা ইভানা যেমন বলেন, বিরতি হোক নিয়মিত, ইতিবাচক এবং পরিকল্পিত—যারা দিনকে শুরু করার আগে অল্প সময় নিজেদের সঙ্গে কাটায়, সেই মানুষদের দৃষ্টিভঙ্গি ও কার্যক্ষমতা সাধারণত অনেক বেশি চমৎকারভাবে বিকশিত হয়।
সংক্ষেপে, পারসা ইভানার উক্তি শুধু বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে না, বরং তা শিখিয়ে দেয়—বিশ্রাম হলো বাহ্যিক জগতকে পর্যবেক্ষণ, অন্তর্দৃষ্টি বাড়ানো এবং অন্দরের শান্তি রক্ষা করার এক শক্তি-ভিত্তিক মাধ্যম। এই অন্তরিত বিশ্রাম তাকিয়ে দেয় নতুন সূচনা ও অনুপ্রেরণার দিকে, যা আমাদের প্রত্যেকটি কর্মক্ষেত্র এবং জীবনের অন্যান্য প্রয়াসে “ভালো কিছু” গড়ে তুলতে সাহায্য করে। জীবনের কঠিন সময়ে, যখন জীবন আরাম হারায়—সেদিন সেই বিরতি, সেই স্বল্প সময়কে মনে রাখলে ফিরে পাওয়া যায় কাজের মান, চিন্তার গতি এবং অভ্যন্তরীণ উজ্জ্বলতা। এতে করে চলমান প্রতিযোগিতার আবর্তে হতে না গিয়ে নিজের সময়, গতি ও মান বজায় রেখে—বিরতি থেকে তৈরি হয় এমন শক্তি, যা নতুন আবির্ভাব হিসেবে বয়ে যায় দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের ধারায়।
0 Comments