মাদারীপুরের ইশিবপুরে বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে হট্টগোল: মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে বিতর্ক
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নে বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে টাকার বিনিময়ে সাধারণ সম্পাদক পদ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা বিএনপির অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভাজন বৃদ্ধি করেছে।
বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের লুন্দী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে কমিটি ঘোষণা দেওয়ার পরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত এক ইউপি সদস্য মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ লাভ করেছেন, যা পদবঞ্চিত প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়।
হট্টগোলের বিবরণ
কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জাফর আলী মিয়াকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীর সমর্থকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা জেলা আহ্বায়ককে লক্ষ্য করে ‘জাফরের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দেন এবং তীব্র সমালোচনা করেন।
বিক্ষুব্ধদের ক্ষোভ এবং উত্তেজনা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশকে উপস্থিত হতে হয়। পুলিশসহ অন্যান্যরা মিলেমিশে জেলা আহ্বায়ককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধরা এলাকা থেকে সরে যায় এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রভাব
ইশিবপুর ইউনিয়নের বিএনপির এ ধরনের ঘটনা দলটির ভেতরে শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার পাশাপাশি স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। টাকার বিনিময়ে পদ গ্রহণের অভিযোগ দলের নীতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থী হওয়ায় স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে অপমর্মার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা বিএনপির ভাবমূর্তির জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং ভোটের সময় দলীয় ঐক্য ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে।
দলের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বিভিন্ন নেতারা অভিযোগ তদন্তের আশ্বাস দিলেও, পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দলীয় নেতৃত্বের কাছে ব্যাপক চাপ রয়েছে যাতে তারা সদস্যদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন এবং দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করেন।
আগামী দিনে ইশিবপুরে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে দলের জনপ্রিয়তা ও ক্ষমতায়নের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
উপসংহার
মাদারীপুরের ইশিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে টাকার বিনিময়ে সাধারণ সম্পাদক পদ বিতর্ক ও হট্টগোল দলটির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ও সদস্যদের আস্থা অর্জনের জন্য দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
0 Comments