Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

আলু চাষে লোকসানে চাষিরা: অতিরিক্ত উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার সংকটে কৃষকের হতাশা

 


ভূমিকা

বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিতে আলু একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। তবে ২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আলু চাষিরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন। উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকেরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি কৃষি খাতের জন্য একটি গুরুতর সংকেত।


অতিরিক্ত উৎপাদন ও বাজারে ধস

গত মৌসুমে আলুর ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা এবছর অধিক জমিতে আলু চাষ করেছেন। রংপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যার ফলে উৎপাদন ২০ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যেতে পারেতবে এই অতিরিক্ত উৎপাদন বাজারে সরবরাহের ভারসাম্য নষ্ট করেছে, ফলে দাম কমে গেছে।


উৎপাদন খরচ ও বিক্রয়মূল্যের বৈষম্য

কৃষকেরা জানান, এবছর বীজ, সার, সেচ ও শ্রম খরচ বেড়েছে। প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়েছে ১৯-২০ টাকা, অথচ বিক্রি করতে হচ্ছে ১১-১২ টাকায়ফলে প্রতি কেজিতে ৭-৮ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।


কৃষকের অভিজ্ঞতা

ঠাকুরগাঁওয়ের চাষি হামিদুর রহমান জানান, এক একর জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা, উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৬০০ কেজি। প্রতি কেজি ১১ টাকায় বিক্রি করে তিনি প্রায় ৩০ হাজার টাকা লোকসান গুনেছেন

জয়পুরহাটের কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, গত বছর এই সময়ে কেজিপ্রতি আলু ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা ১৮-২০ টাকায় নেমে এসেছে। উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে


বাজার ব্যবস্থাপনার সমস্যা

কৃষকেরা অভিযোগ করেন, খুচরা বাজারে আলু ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হলেও তারা পাচ্ছেন ১১-১২ টাকা। মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হলেও কৃষকেরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন



সরকারি উদ্যোগ ও পরামর্শ

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, অতিরিক্ত উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার অভাবে কৃষকেরা লোকসানে পড়েছেন। তবে আলু রপ্তানির মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলা করা যেতে পারে। মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া সহ কয়েকটি দেশ আলু নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে


উপসংহার

২০২৫ সালে অতিরিক্ত আলু উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে কৃষকেরা ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা, রপ্তানি বাড়ানো এবং কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা জরুরি।

Post a Comment

0 Comments