সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে হেনস্তা: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হানিফ আটক
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে হেনস্তা করার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হানিফকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানের পর ফেরার পথে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে গাড়িতে করে বাসায় ফিরছিলেন সাবেক সিইসি। রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হঠাৎ কিছু লোক তার গাড়ির গতিরোধ করে এবং উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যানুযায়ী, ওই ব্যক্তি এবং তার সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তেজিত করে তোলে এবং সাবেক সিইসিকে হেনস্তা করে। সঙ্গে সঙ্গে পথচারীরা পুলিশকে খবর দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরবর্তী তদন্তে জানা যায়, অভিযুক্ত হানিফ স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নেতা এবং ঘটনার সঙ্গে তার সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। পুলিশ তাকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক ইন্ধন থাকতে পারে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, যথাযথ প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত তারা কিছুই নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে না।
ঘটনার পরপরই রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। অন্যদিকে, স্বেচ্ছাসেবক দলের একাধিক নেতা আটককৃত হানিফের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন, এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হতে পারে। তারা দ্রুত হানিফের মুক্তি দাবি করেছেন এবং ন্যায়বিচারের আশ্বাস চেয়েছেন।
এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা এবং সচেতন নাগরিক সমাজও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে, সাবেক সিইসির মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হেনস্তা করা একটি গুরুতর অপরাধ এবং এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত না হয় এবং দোষীদের শাস্তি না দেওয়া হয়, তাহলে তা রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমিয়ে দেবে।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃত হানিফকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে এবং ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অন্য ব্যক্তিদেরও খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছে।
সর্বোপরি, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত না করলে রাজনীতির মাঠে উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশা করছে, তদন্তের মাধ্যমে খুব শিগগিরই প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
0 Comments