গত ২৩ জুন সন্ধ্যার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার এক বাসস্ট্যান্ডে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর একটি ঘটনা, যেখানে নিরীহ ব্যবসায়ী—or কথায় বলা হচ্ছে সাধারণ ব্যক্তি—চাঁদা না দেওয়ার প্রতিবাদে অত্যন্ত নির্মমভাবে নির্যাতিত হন। পুলিশ ও সমাজে এই ধরনের ঘটনা কথা শুনে যে প্রতিক্রিয়া আশা করা যায়, তার থেকে অনেক দূরে এই ঘটনার স্বভাব; এখানে সমাজ, আইন ও নৈতিকতার সীমানা ধ্বসে পড়েছে।
মূলত অভিযোগ করা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় দানবীয় চাঁদাবাজ—নাসিম ভূঁইয়া—অর্থ বা চাঁদা না পেয়ে নির্দয়ভাবে ওই ব্যক্তির দাড়ি ধরে টানাটানি, অকথ্য গালাগাল ও মারধর করেন । ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ব্যবসায়ী চরমভাবে বিপদে পড়েই তাঁদের প্রতিবাদ না করেও নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। এই সময় তার মায়ের সহিত থাকা ঘটনায় দাড়ি ধরার পাশাপাশি মোবাইল ফেলে দিতেও তাকে বাধ্য করা হয়; এমনকি তার মাকে ভয় দেখানো, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এই দৃশ্য দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে লোকজনের রোষ ও সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ দেখা গেছে।
আইনি প্রেক্ষাপট
ঘটনার পর পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্তে নেমেছে। সাক্ষীদের নিচ্ছে ও সংশ্লিষ্ট ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণের পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। যদিও ঘিওর উপজেলায় নিয়মিত চাঁদাবাজি এক ভয়াবহ সমস্যা—এতে পুলিশি পদক্ষেপের গুরুত্ব অনেক যায়। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ইতিমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, এবং তা দ্রুত মামলার রূপ নেওয়ার পথে রয়েছে ।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও ভাবনা
এই ঘটনায় সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো: দাড়ি, যা ব্যক্তির সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। సানা–দাড়ি ধরার মতো কর্মব্যবহার সমাজে চরম অপমান—বিশেষ করে যখন তা নারীর আপত্তিজনক মন্তব্য ও মা–ঘটিত নির্যাতনের মাধ্যমে সচেতনভাবে চালানো হয়। জনমনে প্রবল ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “এতটা নির্মমতা কেন?”—এই প্রশ্ন উঠেছে।
প্রতিবাদকারী বলেন, ‘আমি নিয়মিত কাজ করি, রাজস্ব হয় না, কিন্তু এমন নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয় কেন?’—এরকম কথা তার মুখে ওঠে। এরপর তার মাকে ডেকে এনে ভয় দেখিয়ে দাঁড়ি ঘেঁটে ফেলায় তার আবেগিক আঘাতের মাত্রা বেড়ে যায়। মনে হচ্ছে, সম্মানহানি ও অপমানজনিত এই ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত আঘাত নয়, বরং সামাজিকভাবে একটি সঙ্কেত দিয়েছে—শক্তিশালী যারা, তারা আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে চায়।
প্রশাসনিক দায় ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
ফৌজদারি ব্যবস্থা: পুলিশ এই ঘটনাকে কেন্দ্রে রেখে দোষীদের খুঁজে বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সামাজিক সতর্কতা: স্মরণীয় হলো, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ পাশে দাঁড়ায়নি—এই সংকেত সমাজের ক্ষীণতা প্রকাশ করছে।
আইন প্রয়োগ: স্থানীয় প্রশাসন চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে নীরবে না থেকে, সামাজিক ও আইনি ব্যবস্থা হাতে নিতে হবে—কেননা, এর ফলে ভবিষ্যতে অনেক निर्दোষ মানুষ নির্যাতনের মুখে পড়তে পারে।
জনমনসংযোগ: সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ী সমিতিকে সচেতন করে আইনি সহযোগিতা ও সামরিক সাহায্যের ব্যবস্থা প্রয়োজন।
উপসংহার
ঘিওরের এই ঘটনা শুধুমাত্র একজনের দাড়ি টানার ঘটনা নয়—এটি আমাদের আইনি অজুহাত ও ন্যায়বিচারের দুর্বলতা সম্পর্কে কথা বলে। “দাড়ি টানে, মায়ের সামনে গালিগালাজ করে”—এই আচরণ সমাজের জন্য লজ্জা; এটি প্রমাণ করে যে চাঁদাবাজি ও ন্যায়ের চরম অসমতা কত দূর পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও সচেতন সমাজ একত্রে কাজ করে, নিশ্চিত করতে হবে: কেউ অনীতিমূলকভাবে নির্যাতিত হলে তা দ্রুত বিচারের আওতাধীন হবে, অপরাধীদের আইনের চোখে অমণি না পেলেও বিচার হবে—এটিই হলো একটি ন্যায়প্রতিষ্ঠিত সমাজের মৌলিক স্বপথ।
0 Comments