মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার মাহবুবনগর এলাকায় একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে একটি যাত্রীবাহী বাস চালকের অসচেতনতা এবং ঘুমের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ি খাদে পড়ে যায়। জানা গেছে, শান্তি পরিবহনের একটি বাস ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা সড়ক পাড়ি দিচ্ছিল, তখন বাসটির চালক গাড়ি চালানোর সময় ঘুমিয়ে পড়েন। ফলে গাড়িটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে ছিটকে পড়ে, এবং বাসটিতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় কমপক্ষে নয়জন যাত্রী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকিদের স্থানীয় বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগে তারা চালকের অসাবধানতা লক্ষ্য করেছিলেন এবং তাকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে এবং পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ, বিজিবি এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। বাসটিকে খাদ থেকে উদ্ধার করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং আহত যাত্রীদের চিকিৎসা সেবায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে এবং তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা সড়কপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এবং চালকের স্বাস্থ্য সচেতনতা না থাকায় যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি কতটা বেড়ে যেতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশে একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে রাতের বেলায় বা ভোরের দিকে যখন অনেক চালকই ক্লান্তি নিয়ে গাড়ি চালান, তখন এমন দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বারবার চালকের যথাযথ বিশ্রামের গুরুত্ব এবং সড়কপথে নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক উদ্যোগের ওপর জোর দিয়েছেন। এ ঘটনায় আহত যাত্রীরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এখন উৎকণ্ঠিত, এবং তারা আশা করছেন চালকসহ দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে নজরদারি বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে এবং যাত্রীদের জীবন নিরাপদ থাকে। সব মিলিয়ে, এ দুর্ঘটনা আমাদেরকে সড়কপথে সচেতনতা, চালকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং নিরাপদ যাত্রার ওপর জোর দিতে বারবার মনে করিয়ে দেয়, যাতে অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
0 Comments