Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন বাবা, সড়কেই প্রাণ গেল দু’জনের

 


মঙ্গলবার ভোর—২৪ জুন, ২০২৫—ঠাকুরগাঁওয়ের খোশবাজার এলাকায় একটি হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। বাবা আশরাফুল ইসলাম (৫০) তাঁর নবম শ্রেণির মেয়ে রাবিয়াতুন (১৫)কে বডা পাইলট গার্লস হাই স্কুলে নিয়ে গিয়ে একটি তিনচাকা অটোরিকশায় (Paglu) যাত্রা করছিলেন। ওই সময়, ঢাকার দিকে যাচ্ছিল ‘VIP Automobiles’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ওই তিনচাকার পেছন থেকে ডানা ঢোকিয়ে ধাক্কা মারলে তা উল্টে যায়—পরিণামে বাবা ও মেয়ে দু’জনেই ঘটনাস্থলেই তাদের প্রাণ হারান। রাবিয়াতুনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মারা যান।

বাসের ধাক্কায় আহতদের উদ্ধারে স্থানীয়রা সহ পুলিশ, এবং বিজিবি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার ও উদ্ধারকর্ম পরিচালনা করে । ঠাকুরগাঁওয়ের ভুলি থানা অফিসার ইন-চার্জ (OC) সাইফুল ইসলাম জানান, বাসটি জব্দ করে চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছে এবং তাদের ধরতে অভিযান চলছে

 দুর্ঘটনার কারণ ও প্রেক্ষাপট

প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা গেছে, দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল বাসের অতিরিক্ত গতি ও ঘোড়া চালিত তিনচাকায় হঠাৎ ধাক্কা। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণত গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কা থাকে এবং তা ঘটলেও দ্রুত রুখে দেওয়া যায় না, বিশেষ করে যদি দ্রুত উপযুক্ত সতর্কতা বা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ না থাকে।

 আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ

ভুলিজোনে ঘটলে, ভুমি পথে গাড়ি আটকানো, বা যথাযথ ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকলে ট্রাফিক আইন মেনে চিকিৎসা ও হেল্পলাইন ব্যবস্থা জরুরি। আইনানুসারে, চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। টানা অভিযান চলছে তাঁদের ধরতে এবং বাস মালিকদের জরিমানাও হতে পারে, যাতে ভবিষ্যতে দ্রুত দ্রুত বাসের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়

 সামাজিক প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় বাসিন্দা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই দুর্ঘটনায় ব্যাপক শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে—কারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক যেন নিরাপদে স্কুল-যাত্রা করতে পারে, সেই আশ্বাস বলতে পারছি না। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন: "স্কুলে যাওয়ার পথে এমন বিপদ কেন?" এবং আইনি-প্রশাসনিক মানদণ্ডের দ্রুত পরিবর্তন কেন হচ্ছে না।

পরবর্তী প্রস্তাবনা

স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পদক্ষেপ: অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্কুল পথ ও স্কুল নিকটে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা।

ট্রাফিক আইন প্রয়োগ: দ্রুত জরিমানার ব্যবস্থা ও রাস্তা নিরাপদ রাখতে পুলিশের টহল বাড়াতে হবে।

সরকার ও পর্যবেক্ষণ কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ: স্কুলে যাওয়া-আসার সময় ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা বাহিনী ও আইনি সহযোগিতার প্রটোকল তৈরি করতে হবে।

জনসচেতনতা: বাস চালক, ট্রাফিক পুলিশ ও অভিভাবকদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা ও ট্রেনিংয়ের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।


এই দুর্ঘটনা ঠাকুরগাঁওয়ের পুরো সমাজ ও দেশের শিক্ষা‑পরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বাবা ও মেয়ে—যে অজান্তেই স্কুলে যাওয়ার পথে প্রাণ হারিয়েছিলেন—তাদের স্মরণে শুধু আইনগত পদক্ষেপই নয়, সামগ্রিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলোর উন্নয়ন প্রয়োজন। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ তাঁদের মতোই জীবন হারাতে না হয়।

Post a Comment

0 Comments