পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার উপকণ্ঠে ব্যারাকপুরের বাসুদেবপুর এলাকায় তিনজন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা ও একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা।
আটককৃতদের পরিচয়
খায়রুল ইসলাম জুয়েল: স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
আশরাফুর রহমান: আওয়ামী লীগ নেতা ও মঠবাড়িয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান।
হাসান আরাফাত আবিদ: পলাতক সাবেক পুলিশ সুপার।
জগদ্দল থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই তিনজন গত পাঁচ মাস ধরে বাসুদেবপুর মোড় এলাকার তিতাস মণ্ডলের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয়দের সন্দেহের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে।
বৈধ নথিপত্র ও মুক্তি
পুলিশ জানায়, আটককৃতদের কাছে বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা ছিল। তারা কেউই অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেননি। এই কারণে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
তিতাস মণ্ডলের বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকা অনিরুদ্ধ বিশ্বাস জানান, আটককৃতরা তিতাস মণ্ডলের পূর্বপরিচিত। তাদের কাছে বৈধ নথিপত্র ছিল এবং তারা চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছেন বলে দাবি করেন অনিরুদ্ধ। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।
প্রেক্ষাপট
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় ৪৫ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ভারতে পালিয়ে গেছেন। তাদের অনেকেই কলকাতায় অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে কিছু নেতা কলকাতার নিউটাউন ও রাজারহাট এলাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। সম্প্রতি সিলেটের চার শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উপসংহার
কলকাতায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার আটক ও পরবর্তী মুক্তির ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
0 Comments