নতুন রেকর্ড: ‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’ ইউটিউবে ৬ কোটি ভিউ অতিক্রম
মহিন খান পরিচালিত বাংলা নাটক ‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’ ইউটিউবে নজিরবিহীন সাফল্য অর্জন করেছে। মাত্র ১৪ মাসে আপলোডের পর থেকে ৬ কোটি ৬ হাজার ভিউ অতিক্রম করে এটি বাংলা নাটকের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শীর্ষস্থান দখল করেছে । গত আট বছর ধরে শীর্ষে থাকা জনপ্রিয় নাটক ‘বড় ছেলে’-এর রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এই নাটকটি ।
কাহিনী ও অভিনয়
নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন হলেন নিলয় আলমগীর ও জান্নাতুল সুমাইয়া হেমি। কাহিনীর বিষয়বস্তু ঈদ-উত্তেজনা, জামাই ও শ্বশুরের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ও সামাজিক মূল্যবোধের সূক্ষ্ম মিশ্রণ তুলে ধরে। একদিকে হাস্যরস, অন্যদিকে ঈদ উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ির ভাইভিন্ন নানান উৎসবঘোষে নাটকটি দর্শকদের মন কেড়েছে । শ্বশুর কিপটে চরিত্রে জামাইয়ের ওপর টানটান কমেডি দৃশ্য আর ঈদে সামান্য ধর্মীয়-আর্থিক ইস্যুতে মতানৈকের অভিনয় উপস্থাপন দর্শকদের মনে নতুন দিগন্ত খুলেছে ।
সাফল্যের গূঢ় কারণ
মহিন খানের রচনায় ও পরিচালনায় নির্দিষ্ট “ঈদ-ডায়ালগ” ও স্থানীয় সংস্কৃতির সমন্বয় দর্শকদের আকরিক রেখেছে। ফরেন অথবা বড় পর্দার কোনও উচ্চশ্রেণীর কনসেপ্ট নয়—সাধারণ মানুষের জীবনের সাদামাটা চিরন্তন বিষয় যেমন জামাই–শ্বশুরের সম্পর্ক এবং ঈদ আয়োজন—এই স্বাভাবিক বিষয়বস্তুর মধ্য থেকেই এই নাটকের জনপ্রিয়তার অর্থ রয়েছে । পরিচালক মহিন খানও বলেছেন, সামাজিক ও ধর্মীয় বার্তা যতটা শীতল কমেডিই তা দর্শকদের জন্য সহজবোধ্য ও আবেদনময় হয়েছে ।
ট্র্যাক রেকর্ড
‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’: ৬০,০৬,০০৬+ ভিউ (৬ কোটি ৬ হাজার), ইউটিউবে প্রথম ।
‘বড় ছেলে’: ৫৪.৩৮ মিলিয়ন ভিউ (৫ কোটি ৪৩ লাখ ৭৮ হাজার) ।
বর্তমানে ‘বড় ছেলে’-এর সময়কালের ভিউ সংখ্যায় ‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’ এগিয়ে গেছে প্রায় ৭–৮ লাখের বেশি। এটির ইউটিউবে আপলোড হয়েছিল ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে, এবং একবছরেরও কম সময়েই এটি এই রেকর্ড গড়েছে। অন্যদিকে, ‘বড় ছেলে’ নাটকটি মুক্তি পায় ২০১৭-১৯ সালের দিকে ।
বিনোদন শিল্পে প্রভাব
এই সাফল্য বাংলাদেশের ছোট পর্দার নাটকগুলোকে অনলাইনে নতুন সম্ভাবনার দিকে আলোকিত করছে। যে বিষয়সমূহ নিয়ে আগে কম গুরুত্ব ছিল—ঈদের মতো সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসবে ঘিরে সরল কাহিনী, তা আজকের দর্শকদের মন জয় করেছে। এটি নির্মাতাদেরকে অনুপ্রাণিত করছে—সৃজনশীলতা ও কনটেন্ট ভালো হলে ছোট পর্দাও অনলাইনে বড় জায়গা করে নিতে পারে।
উপসংহার
‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’ কেবল মাত্র একটি দৃশ্যাবলীর সাফল্য নয়; এটি সামাজিক কনটেন্টের প্রতিফলন ও মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার সাক্ষি। সর্বসমাজপ্রীতি, ধর্মীয় অনুভূতির স্পন্দন, হাস্যরসের সঙ্গে সামাজিক বার্তা—সবই মিলে এই নাটকটিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আগামীদিনে বাংলা নাটক নির্মাতাদের জন্য এটি একটি মাইলফলক, যা অষ্টাদশ আঙ্গিকে ডিজিটাল যুগের শিল্প সচেতনতার এক নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।
0 Comments