উপদেষ্টা আসিফকে ক্ষমা চাইতে হবে: ইশরাক হোসেন

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার করা আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন এই মন্তব্যকে অত্যন্ত অনুচিত ও অগ্রহণযোগ্য বলে দাবি করে নগরবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নগরবাসীর প্রতি এমন অবজ্ঞাসূচক কথা বলে উপদেষ্টার উচিত ক্ষমা প্রার্থনা করা, কারণ এটি নগরবাসীর মানসিকতাকে আঘাত করেছে এবং স্থানীয় সরকারের প্রতি মানুষের বিশ্বাসহীনতা তৈরি করেছে।

ইশরাক হোসেন আরো বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ভোটাররা যে আন্দোলন দেখিয়েছেন তা ছিল সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত এবং জনগণের উন্নয়নের জন্য গৃহীত একটি প্রগতিশীল পদক্ষেপ। তাদের এই সচেতন অংশগ্রহণকে ছোট করে দেখানো বা অবজ্ঞা করা মোটেও কাম্য নয়। তিনি মনে করিয়ে দেন, গণতান্ত্রিক সমাজে ভোটারদের অধিকার ও মতপ্রকাশকে সম্মান করা অপরিহার্য। এই প্রেক্ষাপটে সজীব ভূঁইয়ার মন্তব্য স্থানীয় মানুষের অনুভূতিতে ব্যথা দিয়েছে এবং সমালোচনার ঝড় তুলে দিয়েছে।

বিএনপি নেতার মতে, একজন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। তার বক্তব্য যেন এলাকাবাসীর অনুভূতি ও সম্মান রক্ষায় সহায়ক হয়, কিন্তু উল্টো এমন মন্তব্য করে তিনি জনগণের আস্থা নষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ক্ষমা প্রার্থনা করা শুধু একটি সামাজিক শিষ্টাচার নয়, এটি মানুষের সাথে বিশ্বাসের সেতুবন্ধন গড়ে তোলে এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সমঝোতার পথ প্রশস্ত করে।

এই ঘটনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা ও প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্যের কারণে স্থানীয় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং নগরবাসীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনী বা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণকে সম্মান জানানো উচিত বলে দাবি করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ইশরাক হোসেনের আহ্বান একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত বহন করে, যা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছে জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দায়িত্বশীল হতে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, সজীব ভূঁইয়া নগরবাসীর অনুভূতিকে গুরুত্ব দিয়ে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন এবং সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে নগর উন্নয়নে অবদান রাখবেন।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এখনও পর্যন্ত এই বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য প্রকাশ না করলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ক্ষমা চাওয়া হলে পরিস্থিতি শিথিল হতে পারে এবং নগরবাসীর মধ্যে আবারো বিশ্বাস ফিরে আসতে পারে। তবে, এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে, যাতে কোনো নেতাই জনগণের প্রতি অবজ্ঞাসূচক বা বিভাজনমূলক মন্তব্য করতে উৎসাহিত না হয়।

সমগ্র পরিস্থিতি থেকে স্পষ্ট যে, গণতান্ত্রিক সমাজে নেতা ও ভোটারের মধ্যকার সন্মান এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অপরিহার্য। এই শ্রদ্ধা বজায় রাখার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য অপরিহার্য। তাই, ইশরাক হোসেনের আহ্বান গৃহীত হলে তা ঢাকার দক্ষিণ সিটির রাজনৈতিক পরিবেশে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।