অমৃতা সিং একজন বহুমুখী প্রতিভাধর অভিনেত্রী, যিনি নব্বইয়ের দশকে বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তার শুরুটা হয়েছিল ১৯৮৩ সালে ‘বেটাব’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, যেখানে তার অভিনয় দর্শকদের মন জয় করে। এরপর একে একে ‘মার্ড’, ‘সাহেব’, ‘সানি’ এবং ‘চামেলি কি শাদি’–এর মতো ছবিগুলো তাকে শীর্ষ অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি দেয়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেকবার আলোচনায় এসেছেন, বিশেষ করে অভিনেতা সইফ আলি খানের সঙ্গে তার বিবাহ এবং বিচ্ছেদকে কেন্দ্র করে। তাদের মধ্যে বয়সের বড় ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও, তারা সংসার শুরু করেছিলেন, তবে পরবর্তী সময়ে ২০০৪ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
সইফ আলি খানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ অনেক বিতর্কের জন্ম দেয়। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, অমৃতা তার বন্ধুর প্রাক্তন স্বামীকে বিয়ে করেছিলেন, যা মিডিয়া ও সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকের কাছে এ বিয়ে ছিল সাহসী এবং আবার অনেকের কাছে তা ছিল বিতর্কিত একটি অধ্যায়। তবে অমৃতা সবসময়ই তার ব্যক্তিগত জীবনকে পেশাগত জীবন থেকে আলাদা রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং একজন দায়িত্বশীল মা হিসেবে নিজের ভূমিকা পালন করে গেছেন। তার দুই সন্তান সারা আলি খান এবং ইব্রাহিম আলি খান আজ সিনেমা জগতে নিজেদের জায়গা তৈরি করেছেন, যা তার গর্বের বিষয়।
বিচ্ছেদের পর অমৃতা অনেকটা নিভৃত জীবনযাপন শুরু করেন এবং বড় পর্দা থেকে কিছুটা দূরে থাকলেও পুরোপুরি হারিয়ে যাননি। সময়মতো তিনি বিভিন্ন সিনেমা, ওয়েব সিরিজ এবং টিভি শোতে উপস্থিত হয়েছেন। যেমন ‘২ স্টেটস’, ‘হিন্দি মিডিয়াম’, ‘বাদলা’ ইত্যাদি ছবিতে তার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলো অনেক প্রশংসিত হয়েছে। ক্যামেরা থেকে সরে থাকলেও অমৃতা পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং তার সন্তানদের কাছে একজন অনুপ্রেরণাদায়ী মা হিসেবে পরিচিত।
সাম্প্রতিক সময়ে অমৃতা ব্যক্তিগত জীবনে অনেকটা শান্তিপূর্ণ এবং আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপন করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি খুব একটা সক্রিয় নন এবং জনসমক্ষে খুব কমই আসেন, তবে তিনি নিজেকে সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রেখেছেন এবং শিল্পের সঙ্গে তার সংযোগ আজও অটুট রয়েছে। অভিনয় এবং চলচ্চিত্রে তার কাজের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মনে একটি স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, অমৃতা সিং এক শক্তিশালী নারী, যিনি ব্যক্তিগত জীবনে নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েও পেশাগত দিক থেকে নিজেকে ধরে রেখেছেন। মা হিসেবে তার ভূমিকা, অভিনেত্রী হিসেবে তার সাফল্য এবং তার আত্মনির্ভরশীল জীবনযাপন তাকে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। আজকের অমৃতা অনেকটাই ব্যক্তিগত শান্তি এবং সন্তুষ্টিকে অগ্রাধিকার দেন, যা তার জীবনকে নতুনভাবে পূর্ণতা দিয়েছে এবং তার ভক্তরা তার এই নতুন অধ্যায়কে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দিয়ে গ্রহণ করেছেন।
0 Comments