Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

গাজায় হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েলের ৭ সেনা নিহত

 


গাজার দক্ষিণাঞ্চল খান ইউনিসে ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের তীব্র সংঘর্ষে ইসরায়েলের সাত সেনা নিহত হওয়ার খবর সারা বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছে। গত ২৪ জুন ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট “পুমা” নামক একটি সাঁজোয়া যান ব্যবহার করছিল। হঠাৎ করে হামাসের আল-কাসসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা যসিন ১০৫ ধরনের একটি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে যানটি বিস্ফোরিত হয় এবং ভেতরে থাকা সেনারা তাৎক্ষণিকভাবে নিহত হন। নিহত সাত সেনার মধ্যে ছয়জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, আরেকজনের পরিচয় আপাতত গোপন রাখা হয়েছে। এছাড়াও একজন ইসরায়েলি সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হামাসের দাবি অনুযায়ী, তারা পরিকল্পিতভাবে এ হামলাটি চালিয়েছে এবং তারা ইসরায়েলি বাহিনীর অবস্থান চিহ্নিত করে একাধিক দিক থেকে হামলা শুরু করে। এই হামলার ফলে যানটিতে আগুন ধরে যায় এবং সেনারা তা থেকে বের হতে না পেরে ভেতরেই প্রাণ হারান। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং নিহতদের পরিবারকে দুঃখপ্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি ইস্রায়েল হেরজোগ নিহত সেনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে এরা ছিলেন দেশের সাহসী সন্তান, যারা মাতৃভূমি এবং জনগণকে রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছেন।

গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘাত ক্রমশ রক্তক্ষয়ী রূপ নিয়েছে। এ পর্যন্ত গাজায় ৫৬,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলের ৮৬০ জনের বেশি সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। আন্তর্জাতিকভাবে শান্তি আলোচনা এবং যুদ্ধবিরতি চেষ্টায় বারবার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন করে এ ধরনের হামলা পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে এবং যুদ্ধ থামানোর আহ্বানগুলো উপেক্ষিত হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য যে, ইসরায়েল এবং হামাস উভয় পক্ষই এ সংঘাতে নানা ধরনের ভারী অস্ত্র এবং উন্নত যুদ্ধ কৌশল ব্যবহার করছে। ইসরায়েলের বাহিনী নিয়মিত বিমান হামলা, ড্রোন অভিযান এবং স্থল অভিযান চালিয়ে আসছে, অন্যদিকে হামাসও ছোড়া রকেট, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ এবং গেরিলা কৌশল অবলম্বন করে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার মানবিক বিপর্যয় এবং বেসামরিক হতাহতের কথা তুলে ধরে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাচ্ছে।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এমন এক দিকে গড়িয়েছে যেখানে উভয় পক্ষই যুদ্ধ বন্ধের ইচ্ছা না দেখিয়ে নিজেদের কৌশলগত সুবিধা অর্জনে ব্যস্ত রয়েছে। এ পরিস্থিতি আরও অনেক পরিবারের জন্য অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং গাজার জনগণসহ পুরো অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং মানবিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছে।

সর্বোপরি, ইসরায়েলের সাত সেনা নিহত হওয়ার এ ঘটনা কেবল একটি বিচ্ছিন্ন হামলা নয়, এটি গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের নির্মম বাস্তবতা এবং ভয়াবহ মানবিক ক্ষয়ক্ষতির একটি স্পষ্ট উদাহরণ। যুদ্ধ থামানোর জন্য জরুরি এবং কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে, যা শেষ পর্যন্ত গোটা অঞ্চলে আরও অনেক মৃত্যু, ধ্বংস এবং অস্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে।

Post a Comment

0 Comments