‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে আসন্ন জুলাই মাসজুড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গণসংযোগমূলক পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই পদযাত্রার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের মানুষকে পরিবর্তনের বার্তা পৌঁছে দেওয়া, গণতান্ত্রিক সংস্কার দাবি তোলা এবং নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা করা। “জুলাই সনদ” নামে একটি ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে এনসিপি তাদের দাবি-দাওয়ার রূপরেখা প্রকাশ করেছে, যেখানে স্বচ্ছ নির্বাচন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, কার্যকর সংসদীয় ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এই কর্মসূচিকে ঘিরে এনসিপির তরুণ ও ছাত্র-ভিত্তিক সংগঠনগুলো যেমন “Students Against Discrimination” এবং “জাতীয় যুবশক্তি” সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছে। বিশেষ করে তরুণদের অংশগ্রহণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। এনসিপি আশা করছে, এই পদযাত্রার মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে এবং রাজনৈতিক পরিবেশে একটি গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটাতে পারবে। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই পদযাত্রা কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি গণতান্ত্রিক পথ নির্মাণের প্রচেষ্টা।”
পদযাত্রাটি শুধুমাত্র ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা পর্যায়ে পথসভা, মতবিনিময় ও মিছিলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংলাপ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে এনসিপি মাঠপর্যায়ে নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দিতে চায়। ইতোমধ্যে দলটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মিশনের সঙ্গেও সংলাপে অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের সাম্প্রতিক বৈঠক উল্লেখযোগ্য। এই বৈঠকে তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার এবং নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেন।
এনসিপির এই উদ্যোগ রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার জন্য এনসিপির এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। তবে কতটা সংগঠিতভাবে তারা এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারবে এবং মাঠে কতটা জনসম্পৃক্ততা গড়ে তুলতে পারবে, সেটাই ভবিষ্যতের রাজনীতিতে দলটির অবস্থান নির্ধারণ করবে।
0 Comments