যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সম্পর্কের টানাপোড়েন ও পর্যটনে প্রভাব: ২০২৫ সালের বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

 

ভূমিকা

২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতিমালা, কানাডা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য এবং সীমান্তে নিরাপত্তা কড়াকড়ি এই দুই দেশের সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে, যেখানে কানাডীয় পর্যটকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

---

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্তেজনার পটভূমি

২০২৫ সালের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কানাডার উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেন, যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এছাড়া, কানাডাকে "৫১তম রাজ্য" হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্পের মন্তব্য কানাডীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে। এই পরিস্থিতিতে কানাডীয় সরকার ও জনগণ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য ও ভ্রমণের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দেয়।

---

পর্যটনে প্রভাব: পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ

কানাডীয় পর্যটকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের হ্রাস

২০২৫ সালের মার্চ মাসে কানাডীয়দের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ ১৩.৫% হ্রাস পায়, এবং সড়কপথে ভ্রমণ ৩৩% কমে যায়।২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে কানাডীয়দের যুক্তরাষ্ট্রে ফেরা ১৩.১% হ্রাস পায়। ২০২৫ সালের মার্চে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইট বুকিং ৭১–৭৬% হ্রাস পায়। 

অর্থনৈতিক প্রভাব

যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন খাতে কানাডীয় পর্যটকদের হ্রাসের ফলে ২০২৫ সালে $৩.৩ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী শহরগুলো, যেমন নিউ ইয়র্কের আপস্টেট অঞ্চল, এই হ্রাসের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

---

বিকল্প গন্তব্যের দিকে কানাডীয়দের ঝোঁক

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে কানাডীয় পর্যটকরা মেক্সিকো, ইউরোপ এবং কানাডার অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে ভ্রমণ করছেন।

মেক্সিকোতে কানাডীয় পর্যটকদের আগমন ১৫.৬% বৃদ্ধি পেয়েছে।

কানাডার বিভিন্ন প্রদেশ, যেমন ম্যানিটোবা, অভ্যন্তরীণ পর্যটন বাড়াতে বাজেট বৃদ্ধি করেছে।

---

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও সুপারিশ

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে। দুই দেশের সরকার ও পর্যটন সংস্থাগুলোর উচিত পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং ভ্রমণকারীদের জন্য নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ নিশ্চিত করা।

---

উপসংহার

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সম্পর্কের টানাপোড়েন ২০২৫ সালে পর্যটন খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি দুই দেশের অর্থনীতি ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সম্পর্কের উন্নয়ন ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।