ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যুতে আন্দোলন অব্যাহত: রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বৃদ্ধি

 

২০২৫ সালের মে মাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে তার সমর্থকরা টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আন্দোলন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জনজীবনে প্রভাব ফেলেছে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

পটভূমি: নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও গেজেট প্রকাশ

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। তবে, ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে। পরবর্তীতে, ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে ।

আন্দোলনের সূচনা ও বর্তমান অবস্থা

গেজেট প্রকাশের পরও স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে শপথ গ্রহণের তারিখ ঘোষণা না করায় ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা 'ঢাকাবাসী' ব্যানারে নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তারা নগর ভবনের প্রধান গেটসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন, যার ফলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় ।

আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন, ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করানো না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এছাড়াও, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন ।

বিএনপির অবস্থান ও হুঁশিয়ারি

প্রথমদিকে বিএনপি দলীয়ভাবে এই আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ না করলেও, পরবর্তীতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "আজ-কালকের মধ্যে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ালে যে আন্দোলন চলছে, তা অন্যভাবে রূপ নেবে" ।

আইনি প্রক্রিয়া ও হাইকোর্টের রিট

ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। এই রিটের আদেশ আজই (২২ মে ২০২৫) দেওয়া হবে বলে জানা গেছে ।

সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও জনদুর্ভোগ

আন্দোলনের ফলে নগর ভবনের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে এবং নাগরিক সেবায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক অবরোধের কারণে যান চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলে সাধারণ জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ।

---

উপসংহার:

ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যুতে চলমান আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আইনি প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান হওয়া জরুরি, যাতে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং জনগণের ভোগান্তি কমে।