মাইলফলক ছোঁয়া হলো না, ৪৯৫ রানে থামল বাংলাদেশের ইনিংস

 

গল টেস্টে মাইলফলকের খুব কাছ থেকে ফিরে এলো বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি ‘প্রায়’ যুক্ত হলো। গল টেস্টে লঙ্কানদের বিপক্ষে ৫০০ রানের মাইলফলক ছোঁয়ার খুব কাছাকাছি গিয়েও থমকে গেল টাইগারদের ইনিংস। ৪৯৫ রানে অলআউট হয়ে গেলো বাংলাদেশ, শেষ উইকেটে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা জুটির লড়াইও শেষ রক্ষা করতে পারলো না।

শক্ত ভিত, ভালো শুরুর পর আশার রঙ

ব্যাট হাতে বাংলাদেশ এ টেস্টে শুরুটা বেশ মজবুত করে। টপ অর্ডারে তামিম, মুমিনুল, শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ পৌঁছে যায় চারশ’র ঘরে। মিডল অর্ডারেও কিছু দৃঢ়তা ছিল। এক সময় মনে হচ্ছিল—এই ইনিংস হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

কিন্তু সমস্যা শুরু হয় সাত নম্বরের পর। একে একে ফিরে যান গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটাররা। রান আটকে যায় ৪৮০-এর ঘরে। তখনই চোখ পড়ে শেষ উইকেট জুটির দিকে—হাসান মাহমুদ ও টেস্ট অভিষিক্ত নাহিদ রানার দিকে।

শেষ উইকেট জুটির সাহসী চেষ্টা

শেষ উইকেটে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা কিছুক্ষণ ক্রিজে থেকে প্রত্যাশা জাগিয়েছিলেন। দর্শকদের মনে হয়েছিল—মাইলফলক ছোঁয়া যাবে হয়তো। তারা ১৫ রানের মতো যোগ করেই নাহিদ রানার উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ফলে ইনিংস থেমে যায় ঠিক ৪৯৫ রানে।

একটি প্রান্তে হাসান মাহমুদের সাহসী চেষ্টা চোখে পড়ার মতো হলেও, অভিজ্ঞতার ঘাটতি ও চাপ সামলানোর অভাবেই ভেঙে পড়ে জুটি।

মাইলফলকের ঠিক আগেই থামা

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের পাঁচশর বেশি রানের ইনিংস এতটা ঘনঘন হয়নি। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়:

৬৩৮ রান, গল, ২০১৩

৫১৩ রান, চট্টগ্রাম, ২০১৮

৫৪১/৭ ডিক্লেয়ারড, পাল্লেকেলে, ২০২১

গলেই আবার সে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে পারত আজ, যদি শেষ জুটি ৫ রান আরও করতে পারত। সে সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় হতাশা থেকেই যাচ্ছে।

বাংলাদেশি ব্যাটারদের পারফরম্যান্স (সারাংশ)

তামিম ইকবাল – ৮১

নাজমুল হোসেন শান্ত – ৭০

মুমিনুল হক – ৫৪

মুশফিকুর রহিম – ৯২

লিটন দাস – ৪১

মেহেদী হাসান মিরাজ – ৩৩

বাকিরা – বড় অবদান রাখতে পারেননি

উল্লেখযোগ্য হলো মুশফিকের ইনিংস, যেখানে তিনি আবারও বড় স্কোরের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন।

লঙ্কান বোলারদের কৃতিত্ব

লঙ্কানদের বোলিং ইউনিট দারুণ নিয়ন্ত্রিত ও পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে। বিশেষ করে:

ধনঞ্জয়া ডি সিলভা

বিশ্ব ফার্নান্দো

প্রকাশনারাজ

জয়াসুরিয়া

তারা পুরো ইনিংসে বারবার চাপ সৃষ্টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন।

উপসংহার

বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের সারমর্ম—ভালো শুরু, মাঝখানে ভরসা, কিন্তু শেষটায় হতাশা। মাইলফলকের খুব কাছ থেকে ফিরে আসা এ ইনিংস আবারও টিম ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়দের কাছে প্রশ্ন রেখে দিল—শেষ উইকেটগুলোকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে কি?

তবুও, ৪৯৫ রান এমন এক সংগ্রহ যা বল হাতে লঙ্কানদের চাপে ফেলতে পারে। এখন অপেক্ষা—বোলাররা কীভাবে এই রান ডিফেন্ড করেন এবং টেস্টের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখেন।