এবার সন্তান নিয়ে শাকিবকে জড়িয়ে অপু-বুবলীর পাল্টাপাল্টি পোস্ট

 

ঢালিউড তারকা শাকিব খান আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। তবে এবার আলোচনার বিষয়বস্তু তাঁর অভিনয় নয়, বরং ব্যক্তিগত জীবন। সম্প্রতি শাকিবের প্রাক্তন দুই স্ত্রী অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী সামাজিক মাধ্যমে একে অপরকে ঘিরে পোস্ট দিয়ে আলোড়ন তুলেছেন। উভয়ের পোস্টেই রয়েছে সন্তান নিয়ে অভিযোগ, ব্যাখ্যা, এবং ঘুরে-ফিরে এসেছে শাকিব খানের নাম। ফলে ভক্ত-অনুরাগীসহ মিডিয়া জগতে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়।

---

ঘটনার সূচনা কোথা থেকে?

গত সপ্তাহে অপু বিশ্বাস তার ছেলে আব্রাম খান জয়-কে নিয়ে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন ফেসবুকে। সেখানে তিনি লেখেন:

"আমি একজন মা, আমার দায়িত্ব সন্তানের জন্য লড়াই করা। একজন সন্তানের দায়িত্ব শুধু জন্মদাতা নন, লালন-পালনকারীরও। আমি চাই না, আমার সন্তান কারও অবহেলার শিকার হোক।"

এই পোস্টে সরাসরি কারও নাম না থাকলেও, ভক্তমহল ধরে নেয় তিনি শাকিব খানকে ইঙ্গিত করেছেন।

---

বুবলীর পাল্টা প্রতিক্রিয়া

এই পোস্টের পরদিনই বুবলী নিজের ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে একটি স্টোরি শেয়ার করেন যেখানে লেখা ছিল:

"মা হওয়া সহজ, কিন্তু দায়িত্বশীল মা হওয়া চ্যালেঞ্জ। নিজের দায়িত্বে ঘাটতি রেখে অন্যকে দোষারোপ করার মানে নিজেকে ধোঁকা দেওয়া।"

এই স্টোরি নিয়ে অনেকেই মনে করছেন, বুবলী স্পষ্টভাবে অপু বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করেই কথাগুলো বলেছেন।

এর পরেই দুজনের মধ্যে শুরু হয় একরকম ‘স্ট্যাটাস যুদ্ধ’, যেখানে দুইজনই নিজেদের মাতৃত্ব, সন্তানের প্রতি ভালোবাসা এবং শাকিবের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করে চলেছেন।

---

শাকিব খানের অবস্থান

এই মুহূর্ত পর্যন্ত শাকিব খান এই বিষয়ে কোনো গণমাধ্যমে সরাসরি মুখ খুলেননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, শাকিব এখন পুরোপুরি পেশাগত কাজে মনোযোগী এবং ব্যক্তিগত বিষয়গুলোকে তিনি গণমাধ্যমে আনতে চান না। তবুও সামাজিক মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়া এই পোস্টগুলো তাঁকে ঘিরেই, যা নিয়ে নীরব থাকলেও প্রভাব পড়ছে তাঁর ভাবমূর্তিতে।

---

সন্তান দুটির বর্তমান অবস্থা

অপু বিশ্বাস ও শাকিব খানের ছেলে: আব্রাম খান জয় (জন্ম: ২০১৬ সাল, কলকাতা)

বুবলী ও শাকিব খানের ছেলে: শাহজাদ খান বীর (জন্ম: ২০২০ সাল, যুক্তরাষ্ট্রে)

দুই শিশুই এখন স্কুলে পড়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ে মাঝেমধ্যে। দুই মা-ই আলাদাভাবে সন্তানদের বড় করছেন। তবে শাকিব খানকে কোনো সময় সন্তানদের সাথে প্রকাশ্যে দেখা যায় না বললেই চলে, যা নিয়েও বারবার প্রশ্ন উঠেছে।

---

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া

এই ‘স্ট্যাটাস যুদ্ধ’ সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

একজন নেটিজেন লিখেছেন:

"শিশুরা কোনো বিতর্কে জড়িত নয়। তারকা বাবা-মায়ের উচিত সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল আচরণ করা।"

অন্য একজন বলেন:

"দুই মায়ের কথাতেই মাতৃত্বের আবেগ আছে, কিন্তু ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে এভাবে পোস্ট করা উচিত নয়। এতে সন্তানরাই ভবিষ্যতে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"

---

মিডিয়ার দৃষ্টি

বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে প্রচার পাচ্ছে। অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো একাধিক শিরোনামে খবর প্রকাশ করছে যেমন:

“শাকিবকে নিয়ে অপু-বুবলীর নতুন দ্বন্দ্ব”

“সন্তানদের নিয়ে স্ট্যাটাস যুদ্ধে ব্যস্ত দুই প্রাক্তন”

“শাকিব কেন নীরব?”

---

বিশ্লেষকদের মতামত

সমাজবিজ্ঞানী ও মিডিয়া বিশ্লেষক ড. সুমনা আফরোজ বলেন:

“তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকবেই। তবে যখন সন্তানদের কথা উঠে আসে, তখন সেটিকে আরও সংবেদনশীলভাবে দেখা উচিত। এমন প্রকাশ্য কথোপকথনে শিশুদের ভবিষ্যত প্রভাবিত হতে পারে।"

---

পূর্ববর্তী ঘটনা প্রবাহ

শাকিব-অপুর গোপন বিয়ে ২০০৮ সালে হলেও তা প্রকাশ্যে আসে ২০১৭ সালে। পরে বিচ্ছেদ হয় ২০১৮ সালে।
বুবলীর ক্ষেত্রেও অনেকটা একইরকম পরিস্থিতি, ২০২০ সালে সন্তান জন্মালেও তা ২০২২ সালে প্রকাশ্যে আসে। এরপরেও দুজনের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলে।

---

কি হতে পারে পরবর্তী ধাপ?

এখন প্রশ্ন উঠছে —

শাকিব কি এ নিয়ে মুখ খুলবেন?

সন্তানদের বিষয়ে কোনো আইনি বা সামাজিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি?

মিডিয়াতে কি আবার ত্রিমুখী সাক্ষাৎকার বা উত্তেজনা তৈরি হবে?

এমন প্রশ্নের উত্তর এখনই না মিললেও, এটা স্পষ্ট যে ঢালিউডের সবচেয়ে আলোচিত ‘পারিবারিক’ অধ্যায় নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে।

---

উপসংহার

তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহ যেমন বেশি, তেমনি তাদের থেকে প্রত্যাশাও থাকে বেশি দায়িত্বশীলতা। সন্তানদের ভবিষ্যত ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় যতটা সম্ভব এমন ‘স্ট্যাটাস যুদ্ধ’ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। আর যদি সত্যিই কোনো সমস্যা থাকে, সেটির সমাধান হওয়া উচিত বৈধ, ব্যক্তিগত ও রুচিশীল উপায়ে — কারণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কিন্তু এখন দু’টি নিরীহ শিশু।